নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জালিয়াতির করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের বিবরণী চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস ।
ইতিমধ্যে দুদকের বরিশাল সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রণজিত কুমার কর্মকার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত পৃথক নোটিশ গত রোববার বরিশাল বোর্ডে পৌঁছেছে। নোটিশপ্রাপ্তদের আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে তাদের এবং পরিবারের (স্ত্রী-সন্তান) সম্পদের বিবরণী দুদক কার্যালয়ে প্রেরণের জন্য বলা হয়েছে নোটিশে।
নোটিশ প্রাপ্তরা হলেন- পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ কুমার গাইন, সাবেক সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক একে আজাদ ফারুক (কয়েক মাস আগে স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অবসরগ্রহণকারী), শাখা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, উচ্চমান সহকারী সুজাতা স্বর্ণকার, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অফিস সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পাল, মনির হোসেন, নিতাই ও শংকর।
বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস বলেন, গত রোববার দুদক থেকে পৃথক দুটি নোটিশ আসে শিক্ষা বোর্ডে। একটি নোটিশ সরাসরি সেকশন অফিসার শহীদুল ইসলামের কাছে দিয়েছে দুদক। অপর নোটিশে ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের তথ্য চেয়ে তার (চেয়ারম্যান) বরাবর চিঠি দেয়া হয়। তিনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট ৭ জনকে ওই চিঠির অনুলিপি দিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বরিশাল বোর্ডে উচ্চতর গণিত বিষয়ে ১৮ শিক্ষার্থীর জালিয়াতি ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, পরীক্ষক, নিরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক, নিরাপত্তাকর্মীসহ ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং দুটি ভিডিও ফুটেজের উপর ভিত্তি করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে প্রমাণিত হয়, অভিযুক্ত চক্রটি দীর্ঘ বছর ধরেই জালিয়াতির মাধ্যমে ফেল থেকে পাস এবং জিপিএ-৫ পাইয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জালিয়াতির ঘটনায় অফিস সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পাল, শংকর, নিতাই, মনির হোসেনকে বরখাস্ত করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এরআগে গত বছরের ২৬ আগস্ট শিক্ষাবোর্ডের তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম বাদী হয়ে অফিস সহকারী গোবিন্দ চন্দ্র পাল ও সংশ্লিষ্ট ১৮ পরীক্ষার্থীসহ মোট ১৯ জনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পুলিশের অপরাধ গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।
Leave a Reply